শেরপুরের নকলা উপজেলায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অধীনস্থ অলাভজনক ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ‘সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ)’-এর উদ্যোগে দিনব্যাপী স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক উপজেলা স্টেকহোল্ডার (অংশীজন) কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কার্যালয় (বিআরডিবি) হলরুমে এসডিএফ শেরপুর জেলা কার্যালয়ের আয়োজনে উৎসবমুখর পরিবেশে এই কর্মশালাটি সম্পন্ন হয়।
এসডিএফ মূলত গ্রামীণ দরিদ্র ও হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এসডিএফ-এর বাস্তবায়নাধীন ‘রেজিলিয়েন্স এন্টারপ্রিনারশীপ এন্ড লাইভলীহুড ইম্প্রুভমেন্ট (আরইএলআই)’ প্রজেক্টের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল এবং জনবান্ধব করার লক্ষ্যেই এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালার মূল প্রতিপাদ্য ছিল তৃণমূল পর্যায়ের উপকারভোগীদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সাথে সমন্বয় সাধন।

উক্ত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসডিএফ-এর জেলা ব্যবস্থাপক মো. গোলাম মোস্তফা। তিনি তাঁর বক্তব্যে এসডিএফ-এর লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং জেলায় চলমান বিভিন্ন কার্যক্রমের বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেন।
এসডিএফ-এর ক্লাস্টার ফেসিলিটেটর (সিএফ) সাদিয়া আফরিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত করেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফারিয়া ইয়াসমীন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. নাঈমা ইসলাম পিংকি।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিপন চন্দ্র গোপ, জনতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন জাহান এবং উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান। বক্তারা তাদের আলোচনায় বলেন, শুধুমাত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নই নয়, বরং একটি সুস্থ ও সবল জাতি গঠনে পুষ্টি সচেতনতার বিকল্প নেই। এসডিএফ-এর এই উদ্যোগ গ্রামের প্রান্তিক নারীদের স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি জ্ঞান বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তাঁরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কর্মশালায় এসডিএফ-এর কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্মকর্তা (স্বাস্থ্য ও পুষ্টি) মেসবাউল মোকাব রবিন, জেলা কর্মকর্তা (হিসাব ও প্রশাসন) মো. মাহমুদুর রহমান, ফিল্ড সুপারভাইজার (সিপিএসপি) মো. কামরুল ইসলাম, ক্লাস্টার কর্মকর্তা (আরইএলআই-০৭) স্মৃতি দাস এবং ক্লাস্টার হেলথ ও নিউট্রিশন ফেসিলিটেটর শুভ সাহা প্রমুখ।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক এবং সেবাদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তবে কর্মশালার অন্যতম আকর্ষণ ছিল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত এসডিএফ-এর উপকারভোগী নারী সদস্যবৃন্দ। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং মতামত প্রদান অনুষ্ঠানটিকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীরা জানান, এই ধরনের স্টেকহোল্ডার মিটিং বা কর্মশালা বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে কাজের সমন্বয় বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে আরইএলআই (RELI) প্রজেক্টের মাধ্যমে গ্রামের অবহেলিত নারীরা কীভাবে পুষ্টিহীনতা দূর করে সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারে এবং একইসাথে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

