সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শেরপুরের নকলা উপজেলার ৬নং পাঠাকাটা ইউনিয়নের চন্দ্রকোনা বালিগঞ্জ এলাকায় এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পাঠাকাটা ইউনিয়ন পরিষদ। এলাকার পিছিয়ে পড়া এবং অনগ্রসরমান জনগোষ্ঠীকে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়াই ছিল এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। গ্রামীণ বিচার ব্যবস্থার এই গুরুত্বপূর্ণ দিকটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এই মতবিনিময় সভা বিশেষ ভূমিকা রাখে।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ তৃতীয় পর্যায়ে কর্মরত নকলা উপজেলা সমন্বয়কারী হুমায়ুন কবীর। তার তত্ত্বাবধানে গ্রাম আদালত সম্পর্কে সাধারণ ধারণা, এর বিচারিক ক্ষমতা, বিচারপ্রার্থীদের জন্য সুবিধা এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এছাড়া, গ্রাম আদালতের ইতিবাচক প্রভাব এবং সফলতার চিত্র তুলে ধরে একটি ভিডিও শো প্রদর্শন করা হয়। এই ভিডিও প্রদর্শনীর মাধ্যমে গ্রামবাসীরা হাতে-কলমে জানতে পারেন কিভাবে খুব সহজে ও অল্প খরচে তারা স্থানীয় ছোটখাটো বিরোধের নিষ্পত্তি করতে পারেন, যা তাদের সময় ও অর্থ সাশ্রয়ে সহায়ক হবে।পর্যায় ক্রমে উপজেলার প্রত্যোকটা ইউনিয়নে গ্রাম আদালত বিষয়ক মতবিনিময় সভা ও ভিডিও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা গ্রাম আদালতের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন। তারা জোর দিয়ে বলেন যে, ছোটখাটো দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা স্থানীয়ভাবে গ্রাম আদালতে নিষ্পত্তি করার সুযোগ থাকায় সাধারণ মানুষকে দূরবর্তী আদালতে দৌঁড়াতে হয় না। এতে আদালতের ওপর মামলার চাপ যেমন কমে, তেমনি গ্রামীণ জনপদে শান্তি ও সৌহার্দ্য বজায় থাকে। বক্তারা আরও বলেন, এই আদালতের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বৃদ্ধি করা গেলে তা গ্রামীন বিচার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্যবৃন্দ উপস্থিত জনসাধারণের উদ্দেশে গ্রাম আদালতকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করার আহ্বান জানান।
আলোচনা ও ভিডিও প্রদর্শনী শেষে উপস্থিত অংশগ্রহণকারী ও কুইজ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্যবৃন্দসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বিপুল সংখ্যক সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটির সফলতা দেখে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এর মাধ্যমে পাঠাকাটা ইউনিয়নের জনগণ গ্রাম আদালতের সুবিধা নিতে আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে এবং নিজেদের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য এই সহজলভ্য মাধ্যমকে ব্যবহার করবে। এই ধরনের উদ্যোগ গ্রামীণ বিচারিক কাঠামোকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।


