চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগরে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এক পরিবারকে পরিকল্পিতভাবে হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনুস পাড়ার বাসিন্দা আবদুল সামাদের পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিকদের সামনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে আবদুল সামাদ বলেন, “জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে স্থানীয় আবদুল মান্নান ও আবদুল হান্নান দীর্ঘদিন ধরে আমাকে ও আমার পরিবারকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছেন। সম্প্রতি তারা থানায় একটি অভিযোগ দিয়ে দাবি করেন, আমি নাকি তাদের কাছে চাঁদা চেয়েছি এবং তাদের বাবা মৃত গফুরকে মারধর করেছি বা হত্যার বিষয়ে জানি। অথচ এসব অভিযোগের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।”
তিনি আরও দাবি করেন, “আমরা জানতে পেরেছি, তারা দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে এবং তা না দিলে আমাদের গফুর হত্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে। এমনকি সাংবাদিকদের কাছেও আমাদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দিয়েছে।”
আবদুল সামাদের অভিযোগ, “আমরা পাশের হিন্দু শীল পাড়ার নীলমা শীলের পরিবারের ওপর হামলার বিষয়েও জানতে পেরেছি। তাদের বাড়ি থেকে রাতে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়। ভয়ে পরিবারটি এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায় এবং পরে জমি বিক্রি করে দেয়। সেই জমির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা না থাকলেও আমাদের টার্গেট করা হচ্ছে।”
রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন আবদুল সামাদ। তিনি বলেন, “আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সে কারণে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ধারীরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমার ছেলেকে শেখ হাসিনার ছবি পদদলিত করার মিথ্যা অভিযোগে ঘর থেকে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “জমির সীমানা নির্ধারণে অভিযুক্তদের বাবা নিজে উপস্থিত ছিলেন এবং আমিনের কাগজে তার স্বাক্ষরও রয়েছে। তবুও বারবার আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। আমার ভাইয়েরা সবাই প্রবাসে, আমি একা দেশে থাকায় আমাকে টার্গেট করা হচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলনে আবদুল সামাদের বড় ভাই আবদুল সুবহানের স্ত্রী অভিযোগ করেন, “আমার স্বামী বিদেশে থাকলেও মান্নান ও হান্নান আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো নিরাপত্তা পাইনি। বরং তারা চাঁদা না দিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে।”
এদিকে, অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আবদুল হান্নান এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, “আবদুল সামাদ আমাদের বড় ভাইয়ের মতো। তার সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। এমনকি তার নামে আমরা কোনো অভিযোগও করিনি।”
হান্নান আরও বলেন, “২০০৮ সালে জমি সংক্রান্ত এক বিরোধে আমাদের বাবা মারা যান এবং মা ও বোন আহত হন। তবে ওই সময়ও আমরা সামাদের নাম উল্লেখ করিনি। আর সাম্প্রতিক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি মাথায় রেখে সাংবাদিকদের ডেকেছিলাম, যাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়।”
তিনি চাঁদা দাবির অভিযোগও অস্বীকার করে বলেন, “আমরা কেন তাদের কাছে চাঁদা চাইবো? বরং তারা আমাদের নাম্বার সাংবাদিকদের না দিয়ে এখন আমাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করছে, যা দুঃখজনক।”
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার সুষ্ঠু তদন্ত ও নিরপেক্ষ বিচার দাবি করেছেন।




