Home » হলুদের চাদরে মোড়ানো নকলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ

হলুদের চাদরে মোড়ানো নকলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ

by desherpotrika
186 views

শফিউল আলম লাভলু: সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে শেরপুরের নকলা উপজেলার কৃষকদের। যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। দূর থেকে দেখলে মনেই হবে না যে, সরিষার চাষ। মনে হচ্ছে হলুদের চাদরে ঢাকা পুরো মাঠ। এ যেন প্রকৃতির ঢেলে দেওয়া হলুদের সমারোহ। বাড়তি ফসল হিসেবে কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা আয় করতে পারবেন এই অ লের কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, গত বছর এ উপজেলার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৭শ হেক্টর। আবাদ হয়েছিল ৪হাজার ৯শ হেক্টর। এ বছর ৫ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আর চাষ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৭শ ৩০ হেক্টর জমিতে।যা গত বছরের চেয়ে ৮শ ৩০ হেক্টর বেশি। গত নকলা উপজেলার কৃষকরা স্থানীয় জাতের পাশাপাশি বারি সরিষা-১৪ ও ১৫, ১৭, বিনা-৯, ৪, ১১ ও স্থানীয় টরি-৭ সরিষার আবাদ করে লাভের মুখ দেখছেন। নভেম্বর মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সরিষা চাষের উপযুক্ত সময়। তাই এই সময় সরিষার ফুলে ভরে গেছে মাঠ। এবছর ৫হাজার ৬জন কৃষকদের দেওয়া হয়েছে সরিষার প্রনোদনা। প্রনোদনা পাওয়ায় সরিষা চাষের আগ্রহ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছেন বলে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন। সরিষা চাষে বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষকরাও বেশ খুশি।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, গত কয়েক বছর ধরেই ধান চাষে তেমন লাভ হয় না। আর এ কারণেই প্রতি বছরই লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই বিকল্প ফসল হিসেবে অন্য ফসলের পাশাপাশি সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়েছি। সরিষা চাষের মাধ্যমেই লোকসানগুলো আমরা পুষিয়ে থাকি। যদি বাজার ভাল থাকে তাহলে ভাল দাম পাব এবং আগামিতে আরো বেশি চাষ করব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহরিয়ার মোরসালীন মেহেদী বলেন, সরিষা আবাদে আগ্রহ বৃদ্ধি করতে কৃষি অফিস থেকে চাষীদের দেওয়া হচ্ছে প্রনোদনা ও নিয়মিত পরামর্শ। সরিষা আবাদে যেমন সেচের প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া কম সময়ে সরিষা আবাদ করা যায়। সরিষার বড় শত্রু জাব পোকা। এবার জাব পোকার আক্রমাণ দেখা যাচ্ছে না। সরিষার তেলের রয়েছে অনেক ওষুধি গুণ। সরিষার খৈল পশুখাদ্য ও জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধিও কাজে ব্যবহার হয়। সরিষার গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া জমিতে সরিষার আবাদ করলে ওই জমিতে সরিষার পাতা পড়ে জমির খাদ্য চাহিদা অনেকাংশে মিটিয়ে থাকে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়ায় এবং জমিতে কোনো চাষ ছাড়াই স্বল্প সময়ে সরিষার ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। আগামীতে উপজেলায় আরও বেশি পরিমাণ জমিতে এ জাতের সরিষা চাষ হবে। যা দেশের ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে ভুমিকা রাখবে।”

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

x
error: কপি করার অভ্যাস ত্যাগ করুন নিজে লিখতে শিখুন