Home » চিরকুটে মিললো খুনির খোঁজ

চিরকুটে মিললো খুনির খোঁজ

by desherpotrika
466 views

নিজস্ব প্রতিবেদক: চাঁদপুরে মতলব উত্তরে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর লাশ উদ্ধারের এক সপ্তাহের মাথায় হত্যাকারীকে আটক করেছে পিবিআই। একদিকে পরকীয়া সম্পর্ক অন্যদিকে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়া। এ নিয়ে পরিবারে বিরোধ। তারই পরিণতিতে ঘটে এই হত্যাকাণ্ড। এরইমধ্যে পুলিশের হাতে আটক হয়েছে ঘাতক।

চাঁদপুরে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল রাশেদ এ বিষয় বিস্তারিত তথ্য জানান।

চট্টগ্রামের বন্দর থানার ইপিজেড এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় দুজনেই স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করতেন। এরইমধ্যে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন পলি (২৮)। বিষয়টি জেনে যায় হান্নান মুন্সির (৪৪) পরিবার। শুরু হয় বিরোধ। ফলে হান্নান ঈদের ছুটিতে পলিকে নিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে তার পরিচিত একজনের বাড়িতে ওঠেন। সেখানে পলিকে রেখে ফিরে যায় চট্টগ্রামের কর্মস্থলে।

এমন পরিস্থিতিতে দাউদকান্দির ওই বাড়িতে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা পলির গর্ভপাত হয়। তবে সেই বাড়ির সবাই জানতো হান্নানের স্ত্রী পলি। এরইমধ্যে হান্নান ফিরে আসে দাউদকান্দিতে। গত ২ জুলাই মৃত সন্তানসহ পলিকে নিয়ে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নেয়। তারপর বিভিন্নস্থানে ঘুরে বেড়ায়। ওই রাতেই চাঁদপুরের মতলব উত্তরের বাগানবাড়ি এলাকার একটি নির্জনস্থানে নিয়ে এসে অসুস্থ পলিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। আর তার সঙ্গে থাকা জামাকাপড় ঘটনাস্থলের কয়েক কিলোমিটার দূরের একটি পুকুরে। তবে লাশের পাশে থাকা একটি চিরকুট পুরো ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রিয়াদ মঈনুদ্দিন জানান, হান্নান মুন্সি তার পরিবারের ওপর প্রতিশোধ নিতে পলিকে হত্যার জন্য তাদের ওপর দায় চাপায়। এমন তথ্য মেলে ওই চিরকুটে। কিন্তু তা ছিল ঘাতক হান্নানেরই হাতে লেখা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, অভিযুক্ত হত্যার দায় স্বীকার করায় আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হবে জেলহাজতে।

এদিকে, থানা পুলিশ প্রথমে অজ্ঞাতপরিচয় এ লাশের সন্ধান পেলেও পরে মামলার তদন্ত দেওয়া হয় পিবিআইকে। আর পুরো বিষয় তদন্ত করতে গিয়ে ধরা পড়ে পলি হত্যার মূল আসামি বাস চালক হান্নান।

শনিবার (০৮ জুলাই) রাতে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে রোববার চাঁদপুরে মতলব উত্তরের ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয় তাকে। সেখান থেকে নিহত পলির ব্যবহৃত জামাকাপড় উদ্ধার করে পিবিআই। এ অভিযানে তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে আরও অংশ নেন পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক শামীম আহমেদ, উপপরিদর্শক আমির মীর, উপপরিদর্শক শরীফ উল্লাহ।

এ নিয়ে রোববার দুপুরে প্রেসব্রিফিং করে বিস্তারিত তথ্য সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন চাঁদপুরে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল রাশেদ।

তিনি জানান, মূলত হান্নান মুন্সি পলি আক্তারের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে তা মেনে দিতে পারেনি তার স্ত্রী ও পরিবার। তাই তাদের ফাঁসাতে অন্তঃসত্ত্বা পলি আক্তারকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। যার জের ধরে হত্যা করে নিজহাতে চিরকুট লিখে লাশের পাশে রেখে যায় এ হান্নান মুন্সি। এসব তথ্য পিবিআইয়ের কাছে স্বীকার করেছে হান্নান মুন্সি।

ঘাতক নান্নান মুন্সির বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দির পাঁচগাছিয়া এলাকায়। আর হত্যাকাণ্ডের শিকার পলি আক্তারের বাড়ি নোয়াখালী সদরের শিবপুর গ্রামে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই ফরহাদ হোসেন মতলব উত্তর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

x
error: কপি করার অভ্যাস ত্যাগ করুন নিজে লিখতে শিখুন